লেখক, মু. মঈন উদ্দিন
স্বাধীনতা অর্জনের পঞ্চাশ বছর পেরিয়ে এসেও বাংলার মাটিতে নারীর নিরাপত্তা আজো প্রশ্নবিদ্ধ। মা, বোন, কন্যা—কারোই যেন আজ রক্ষা নেই। পত্রিকার প্রতিটি পৃষ্ঠা, টেলিভিশনের প্রতিটি হেডলাইন—ধর্ষণ, নির্যাতন, হত্যা! প্রশ্ন জাগে, এই কি তবে স্বাধীন বাংলাদেশ? যে দেশে নারীর সম্ভ্রমের গ্যারান্টি নেই, সেই দেশে স্বাধীনতার সংজ্ঞা কোথায়?
ধর্ষণের জন্য শাস্তি আইনত মৃত্যুদণ্ড—তবু কেন প্রতিদিন নতুন নতুন ঘটনা ঘটে? কেন অপরাধীরা ধরাও পড়ে না, আর ধরলেও বিচারের মুখ দেখে না? কারণ স্পষ্ট—আইন আছে, কিন্তু প্রয়োগ নেই। বিচার আছে, কিন্তু বিচারপ্রাপ্তি নেই। অন্যায় করলে শাস্তি হবে—এই সহজ কথাটাই যখন বাস্তবতায় অনুপস্থিত, তখন অপরাধীর সাহস বেড়ে যায়, আর সাধারণ মানুষের বুক কাঁপে।
প্রতিটি ধর্ষণের ঘটনায় যখন দেখা যায় অপরাধীর রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়া, পুলিশি গাফিলতি কিংবা টাকার জোরে পার পেয়ে যাওয়া—তখন মানুষ ভাবে, এ কেমন দেশ? দুর্নীতির জাল এমনভাবে ছড়িয়ে আছে, যা আইনের হাতকেও বেঁধে রাখে।
বাঙালি কী তবে শুধু স্বাধীনতা দিবস আর বিজয় দিবসে পতাকা উড়াতেই স্বাধীন? নিরাপত্তা, ন্যায়বিচার, সম্মান—এই মৌলিক চাহিদা থেকে বঞ্চিত একটি জাতি আদৌ কি স্বাধীন?
এখন সময়, আইনের শাসনকে শক্ত হাতে বাস্তবায়নের। ধর্ষণের মতো ঘৃণ্য অপরাধে দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে, আইনের চোখে অপরাধীর পরিচয় নয়, অপরাধই যেন মুখ্য হয়। ঘরে-বাইরে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারলে রাষ্ট্র হিসেবে আমরা ব্যর্থই থেকে যাবো।