লেখক, মু. মঈন উদ্দিন
কর্মজীবনের দীর্ঘ ২৬টি বছর যেন চোখের পলকে অতীত হয়ে গেল। এই পথচলায় অনেক স্মৃতি, অনেক মুখ, অনেক সহকর্মী আজ শুধুই নাম আর ছবি হয়ে স্মৃতির পাতায় স্থান করে নিয়েছে। আনিস স্যার, মনসুর স্যার, ফিরোজ আলম বাচ্চু স্যার, মামুন স্যার সহ অনেকেই —তাদের কর্ম, নিষ্ঠা আর আন্তরিকতা আজও মনে পড়ে। আর গতকাল চলে গেলেন আমাদের প্রিয় শাহ আলম স্যার। যেন একে একে সব নিভে যাচ্ছে এ ধরার বুক থেকে।
তিনি শুধু একজন শিক্ষক ছিলেন না, ছিলেন একজন বাতিঘর। সদাহাস্যোজ্জ্বল মুখ, কোমল ব্যবহার ও প্রজ্ঞাপূর্ণ পরামর্শে অনুপ্রেরণা দিতেন। আর আজ, যেন সময় বলে দিল—”এবার তোমার বিদায়ের পালা!”
এই বাক্যটি শুধু এক প্রজন্মের শিক্ষককে বিদায় জানায় না, জানায় একটি আদর্শ, একটি বিশ্বাস, একটি ভালোবাসার অধ্যায়ের ইতি।
এই সকল প্রস্থান যেন আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় জীবনের ক্ষণস্থায়িত্ব ও মৃত্যু-অপরিহার্য বাস্তবতা। এই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে সবাইকে একদিন চলে যেতে হবে—কে আগে, কে পরে। তাই এই জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে সেই চিরন্তন যাত্রার, যেখানে হিসাব হবে কাজের, আচরণের, নিয়তের।
“হে আল্লাহ! ইসলাম ধর্মের প্রকৃত অনুসারী তথা প্রকৃত মুমিন হওয়ার তৌফিক দান করো।
তোমার সন্তুষ্টি অর্জনই হোক আমাদের জীবনের একমাত্র লক্ষ্য।”
আমরা যারা এখনো বেঁচে আছি, যারা প্রতিদিন স্কুলের মাঠে হাঁটি, শ্রেণিকক্ষে পাঠ দেই, শিশুদের হাতে স্বপ্ন বুনে দিই—আমরা যেন ভুলে না যাই, একদিন এই পথ ধরেই আমাদেরও যেতে হবে। কিন্তু যাবার আগে যেন রেখে যেতে পারি এমন কিছু, যা আমাদের অনুপস্থিতিতে আমাদের কথা স্মরণ করাবে শ্রদ্ধায় ও ভালোবাসায়। আনিস স্যার, মনসুর স্যার, ফিরোজ আলম বাচ্চু স্যার, মামুন স্যার এবং শাহ আলম স্যার সহ যে সকল শিক্ষক আমাদের পরিবার থেকে হারিয়ে গেছেন তাদের প্রতি রইলো বিনম্র শ্রদ্ধা।