লেখক, মু. মঈন উদ্দিন, পটুয়াখালীঃ-
সমাজে এমন এক শ্রেণির মানুষ রয়েছে, যাদের আদর্শ নেই, নীতির তো প্রশ্নই আসে না। সময়ের পালাবদলে, সরকার পরিবর্তনের সাথে সাথে এদেরও চরিত্রে ঘটে রঙ পরিবর্তনের এক ভয়াবহ খেলা। আজ যারা একটি দলের চরম সমর্থক, কাল তারা হয়ে যান বিরোধী দলের কণ্ঠস্বর! নীতিহীন এই সুবিধাবাদী গোষ্ঠী নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য প্রতিনিয়ত পরিবর্তন করে তাদের মুখোশ, ভুলিয়ে রাখে নেতৃত্বকে, আর দুষিত করে সমাজের পরিবেশ।
এরা কখনো রাজনীতির নামে, কখনো সামাজিক প্রভাবের অজুহাতে, আবার কখনো রাষ্ট্রীয় দায়িত্বের আড়ালে নিজেদের একচ্ছত্র আধিপত্য কায়েম করে রাখে। আদতে এরা কোনো দলের নয়, এরা কেবল নিজের। যেই দিকেই সুবিধা, সেদিকেই তাদের আনুগত্য। এদের না আছে দেশপ্রেম, না আছে জাতির প্রতি দায়বদ্ধতা। এরা দেশের রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রবেশ করে সমাজব্যবস্থাকে করে দেয় জর্জরিত, কলুষিত এবং বিশৃঙ্খল।
এদের জন্যই প্রকৃত দেশপ্রেমিকরা পিছিয়ে পড়ে, মেধাবীরা বঞ্চিত হয়, আর দুর্নীতির চক্র অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠে। এ ধরনের সুবিধাভোগীদের পরিচয় গোপন নয়—সমাজ তাদের চেনে, রাজনৈতিক মহলও জানে, তবুও তাদের প্রশ্রয় দেওয়া হয়, কারণ তারা ক্ষমতার ছায়ায় নিজেকে দক্ষ রূপে উপস্থাপন করতে জানে।
তাই সময় এসেছে দল-মত নির্বিশেষে সকল রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের উচিত—এই রঙ বদলানো সুবিধাবাদীদের চিনে রাখা এবং তাদের যথাযথভাবে প্রতিহত করা। এদের বিরুদ্ধে সামাজিক সচেতনতা তৈরি করা, যাতে ভবিষ্যতের প্রজন্ম সত্যিকারের নৈতিক মূল্যবোধে গড়ে উঠতে পারে।
জাতির এই কুলাঙ্গারদের রুখে দিতে না পারলে, উন্নয়নের অগ্রযাত্রা ব্যাহত হবে, সমাজে নেমে আসবে বিশৃঙ্খলা ও অনৈতিকতার কালো ছায়া। আমাদের সকলের দায়িত্ব—এই সুবিধাবাদী গোষ্ঠীকে বর্জন করে একটি নীতিনিষ্ঠ, আদর্শ সমাজ গঠন করা।