সাগর খাঁন (বিশেষ প্রতিনিধি)
সাংবাদিকতার নামে আবু জাফর অবাদে চাঁদাবাজি ও ব্লাকমেইল বাণিজ্য চলিয়ে কুখ্যাত হয়ে উঠেছে। এক সময়ে আওয়ামী লীগের দোসর এই জাফর নিয়মিত কাজ করতেন সৈরাচারের পক্ষে। এমনকি নাটোর জেলা বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের সহ-সভাপতি ছিলেন জাফর। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পূর্বে তার কাজ ছিল বিভিন্ন ধনাঢ্য ব্যক্তিকে টার্গেট করে চাঁদাবাজি ও ব্ল্যাকমেইল করা। কিন্তু সরকার পতনের পরে অনেক পরিবর্তন আসলেও পরিবর্তন হয়নি।
অনুসন্ধানে জানা যায়, জাফরের রয়েছে নিজস্ব নারী সাপ্লাইয়ের এক হাউস। গুলশানে এই হাউজ থেকে সুন্দরী রমণীদের বিভিন্ন ধনাঢ্য ব্যক্তিদের কাছে পাঠান আবু জাফর। পরে ওই নারীদের দিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে।
এছাড়া একধিক ভুঁইফোড় সাংবাদিক দিয়ে মিথ্যা সংবাদ প্রচার করে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করেন জাফরচক্র। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এইসব সাংবাদিক নিয়ে জাফর গুলশান বনানীর বিভিন্ন স্পা সেন্টার, বার, সিসা লাউঞ্জে গিয়ে ভয় ভীতি প্রদর্শন ও মিথ্যা নিউজ করার হুমকি দেয়, পরবর্তীতে নিজে সালিশি দরবারের মাধ্যমে চাঁদাবাজি করে একটি অংশের ভাগ পায়।
অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের অঞ্চল- ৩-এর কর্মকর্তা হারুনের ক্যাশিয়ার হিসেবে কাজ করে মূলত এই জাফর। হারুন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে চাঁদাবাজি করতো সিলগালার ভয় দেখিয়ে। পাঁচই আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নিজেকে জাতীয়তাবাদী কর্মচারী শ্রমিক দলের সহ-সভাপতি পরিচয় দিয়ে গুলশান বনানীর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা আদায় করছে। যার সহযোগী হিসেবে কাজ করছে এই ক্যাশিয়ার জাফর। আর ঘুষ না দিলে প্রতিষ্ঠান করা হয় সিলগালা।
সাংবাদিকতার নামে গুলশান বনানীর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গিয়ে মারধরের শিকার হন এই জাফর। বিভিন্ন টিভি চ্যানেল ও পত্রিকার নাম বিক্রি করে চাঁদাবাজি করতে গেলে প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা মারধর করে আটকিয়ে রাখে, পরবর্তীতে মাফ চেয়ে আর কোনোদিন চাঁদাবাজি করবে না এই মর্মে মুচলেকা দিয়ে রক্ষা পায়।
গুলশান বনানীর বিভিন্ন সীসা, বার, স্পা সেন্টার গুলিতে গিয়ে কখনো ডিসির পেমেন্ট, কখনো ওসির পেমেন্ট, কখনো সিটি কর্পোরেশনের নামে চাঁদাবাজি করে এই ভুঁইফোড় সাংবাদিক জাফর। এই ব্যাপারে গুলশানের ডিসির সাথে যোগাযোগ করলে বলেন, এই লোক প্রতারক, কোন সাংবাদিক নয়। আমার নাম বিক্রি করে বিভিন্ন জায়গায় চাঁদা দাবি করছে। আমি তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছি। গুলশান থানার অফিসার ইনচার্জ এর সাথে যোগাযোগ করলে বলেন এই প্রতারকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সাংবাদিক আমাকে ফোন করে জানিয়েছেন, কোন প্রতিষ্ঠান সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দিলে আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিব।
চাঁদাবাজ ও নারী ব্যবসায়ী জাফর এর বিরুদ্ধে কয়েকটি জাতীয় পত্রিকায় নিউজ হয়েছে। এই ভুঁইফোড় সাংবাদিক চাঁদাবাজ ও নারী সাপ্লায়ার জাফরের বিরুদ্ধে প্রশাসন ব্যবস্থা নিবেন বলে প্রত্যাশা করেন গুলশান বনানীর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালিক।